কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতার অভিনয়ের পথচলা শুরু হয়েছিল শিশুশিল্পী হিসেবে। জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় শিশু চরিত্রে অভিনয় করেন। একই নির্মাতার ‘শেষ পর্যন্ত’ সিনেমাতেই তিনি নায়িকা হিসেবে নায়ক রাজ রাজ্জাকের বিপরীতে অভিনয় করেন। সিনেমাটি ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট মুক্তি পায়। সেই হিসেবে নায়িকা হিসেবে তার অভিনয় জীবনের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে।
বাংলাদেশের নায়িকা হয়েও বিশ্ব অঙ্গনে তার খ্যাতি এবং জনপ্রিয়তাকে বিবেচনা করে সম্প্রতি উইকিপিডিয়ায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তার জীবনের নানান কথা। বাংলা, ইংরেজী, তামিল, কোরীয়, উড়ীয়, পাঞ্জাবী ও আরবী ভাষায় অর্থাৎ সাতটি ভাষায় ববিতার জীবনের নানান তথ্য প্রকাশ করেছে অনলাইনভিত্তিক এনসাইক্লোপিডিয়া ইউকিপিডিয়া। বিষয়টি নিয়ে এই মুহূর্তে ভীষণ উচ্ছ্বসিত ববিতা। চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অভিনয়ে জীবনের ৫০ বছর পেরিয়ে জীবনের এই প্রাপ্তিকে বড় করেই দেখছেন তিনি।
ববিতা তার অভিনয় জীবনের ৫০ বছর পেরিয়ে যাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ এবং যাদের কথা বিশেষভাবে স্মরণ করেছেন তাদের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন, শুরুতেই যার প্রতি কৃতজ্ঞ তিনি হচ্ছেন আমাদের বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গর্ব শ্রদ্ধেয় জহির রায়হান। তিনি অভিভাবক হিসেবে ছিলেন বলেই সিনেমাতে কাজ করার সাহস পেয়েছি, অনুপ্রেরণা পেয়েছি। তারসঙ্গে যে নামটি আসে তিনি হলেন আমার বড় বোন সুচন্দা আপা।
তিনি বলেন, প্রথিতযশা পরিচালক যেমন খান আতাউর রহমান, নারায়ণ ঘোষ মিতা, সুভাষ দত্ত, আমজাদ হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, কামাল আহমেদসহ আরো বেশ কয়েকজনের কথা বিশেষত বলতেই হয়। অবশ্যই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি নায়ক রাজ রাজ্জাক, আনোয়ার হোসেন, গোলাম মুস্তাফা, এটিএম শামসুজ্জামানের কথা। তাদের কাছ থেকে অভিনয় শিখে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছি।
ববিতা বলেন, পথ চলতে গিয়ে বাড়ি-গাড়ির প্রতি কোনো লোভ ছিল না আমার। ভালো গল্পের সিনেমা বিনে পয়সায় করেছি। দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি, তাতেই অনুপ্রাণিত হয়েছি। বড় বড় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে উড়িয়েছি- এ প্রাপ্তি আমাকে অন্যরকম উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এজন্য কৃতজ্ঞ চলচ্চিত্র পরিবার ও আমার পরিবারের কাছে।
ববিতা সর্বশেষ নারগিস আক্তারের ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। এরপর অনেক প্রস্তাব পেলেও গল্প এবং চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় আর কাজ করা হয়নি। ভক্তরা তাকে পর্দায় মিস করছেন। এবার সম্ভবত সেই খরা কাটতে যাচ্ছে। করোনাকালে দু’জন নির্মাতার সঙ্গে কথা হয়েছে তার। তারা গল্পও শুনিয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের ছবিতে কাজ করার বিষয়ে ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ববিতা বলেন, করোনার এ সময়ে দু’জন নির্মাতার সঙ্গে কথা হয়েছে। দু’জনের গল্পই আমার কাছে বিবেচনায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের ছবিতে শিগগিরই কাজ করতে যাচ্ছি। সবকিছু স্বাভাবিক হলেই ছবিতে ফেরার প্রত্যাশা রাখছি।
অল বাংলানিউজ ২৪
