চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ভোট দিয়েছেন। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল পৌনে ৯টায় বহদ্দারহাট এখলাসুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি ভোট দেন। এসময় তার সাথে ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
ভোট দেওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের রেজাউল করিম বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির খবর পাওয়া যায়নি। নির্বাচনে ফল যাই আসুক আমি মেনে নিব। জননেত্রীর প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রামের মানুষ নৌকার প্রার্থীকেই জয়ী করবেন। আমি জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল। কাজেই জনগণই আমাদের শক্তি। জনগণের ভালোবাসা ও শক্তিতে ভর করে আওয়ামী লীগ বারবার ক্ষমতায় এসেছে। সুতরাং অন্য কোনো শক্তির উপর ভর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জেতার দরকার হয় না।’
বিএনপির এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগটি সাংবাদিকদের কাছে নাকচ করে দিয়েছেন নৌকার প্রার্থী।
এর আগে সকাল ৮টার পর ভোট দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে ৭৩৫টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোটের গ্রহণের শুরুর দিকে কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের লাইন থাকলেও অনেক কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম। ভোট নেওয়ার দায়িত্বে আছেন ৭৭৫ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৪ হাজার ৮৮৬ সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ৯ হাজার ৭৭২ পোলিং অফিসার।
প্রতি সাধারণ কেন্দ্রে বিভিন্ন বাহিনীর ১৬ জন করে এবং ৪১৬টি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন করে সদস্য নিয়োজিত আছে। এছাড়া ২৫ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের ৪১টি টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলেই সবকটি কেন্দ্রে ভোটের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনী সরঞ্জামাদি বিতরণস্থান পরিদর্শন শেষে রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান সাংবাদিকদের মাধ্যমে ভোটরদের নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন। অন্যদিকে নির্বাচনকে অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে যেই আইনশৃঙ্খলার জন্য থ্রেট হয়ে দাঁড়াবে তাকে কঠোরভাবে দমন করার হুঁশিয়ারি দেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। তিনি বলেন, ‘আমরা ডানেও তাকাবো না, বামেও তাকাবো না।
নগরে পুলিশ, বিজিবি সদস্যদের টহল শুরু হয়েছে গত সোমবার থেকেই। এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট হচ্ছে। ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয় ২৫ জানুয়ারি রাত ৮টায়। নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হলেও অনলাইনে প্রচারণার মাধ্যমে সরব ছিলেন প্রার্থী, কর্মী সমর্থকরা।
এবারের নির্বাচনে নৌকার হয়ে লড়ছেন মো. রেজাউল করিম চৌধুরী আর ধানের শীষ প্রতীকে ডা. শাহাদাত হোসেন, মিনার প্রতীকে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, আম প্রতীকে এনপিপির আবুল মনজুর, হাতপাখায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম, চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ও হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী। তাদেরকে রায় দিবেন নগরের ১৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৭৮ ভোটার।
এছাড়া ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৯টিতে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭২ জন এবং ১৩টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৫৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একটি ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর আলকরণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিম মৃত্যুবরণ করায় সেখানে কাউন্সিলর নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।
